স্তনে চাকা মানেই কি ক্যানসার
স্তনে ছোট কিংবা বড়—যেকোনো প্রকার চাকা অনুভব হলে অনেকেই ভয় পেয়ে যান। মনে করেন, এই চাকা ক্যানসার নয় তো? এ ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে নারীদের স্তনে বিভিন্ন প্রকৃতির চাকা হতে পারে। কিন্তু সব চাকাই ক্যানসার বা ক্যানসারের পূর্বলক্ষণ নয়। তাই বলে স্তনের চাকাকে অবহেলাও করা চলবে না। কারণ নিরিহদর্শন যেকোনো চাকার মধ্যেই ঘাপটি মেরে থাকতে পারে বিপদ।
সাধারণত মাসিকের একটি নির্দিষ্ট সময়ে অনেক মেয়ের স্তনে ভারী ভাব, আকার বৃদ্ধি, সামান্য ব্যথা, জ্বালাপোড়ার সমস্যা দেখা দেয়। এই সমস্যাগুলো পরে আর থাকে না। মাসিকের ওই সময়টায় কিছু হরমোনের মাত্রা কমবেশি হওয়ায় স্তনে চাকা ভাবও দেখা দেয় কারও কারও। এটিকে ফাইব্রোসিস্টিক পরিবর্তন বলে। মাসিক, সন্তানধারণ ও সন্তানকে স্তনদানের কারণে বিভিন্ন সময়ে এই পরিবর্তন ঘটে। এটি আসলে ক্যানসার বা ক্যানসারের পূর্বলক্ষণ নয়। কাজেই এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
অনেক সময় সন্তানকে বুকের দুধ দেওয়া মায়েদের স্তনে চাকা ভাব থাকে এবং তা ক্রমাগত বাড়তে থাকে। এটিও সিস্ট। তবে এ ক্ষেত্রে পানির পরিবর্তে স্তনে দুধ জমে এটি তৈরি হয়। একে বলে গ্যালাক্টোসিল। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শিশুকে বুকের দুধ দিতে দিতেই এটি ভালো হয়ে যায়। তবে কারও কারও ছোট্ট অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে এই সিস্ট অপসারণের প্রয়োজন পড়ে।
কম বয়সী কিশোরী বা তরুণীদের স্তনে কিছুটা শক্ত প্রকৃতির একধরনের চাকা হতে পারে। এটিকে বলে ব্রেস্ট মাউস। এটি এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় নড়ে বেড়ায়। এটিও কিন্তু স্তনের একটি স্বাভাবিক পরিবর্তন হিসেবে ধরা হয়।
তাই বলে স্তনে চাকা হলে নিশ্চিন্ত মনে বসে থাকার উপায় নেই। স্তন ক্যানসারের ক্ষেত্রেও চাকা একটি উপসর্গ। তাই বিপদ এড়াতে যেকোনো প্রকার চাকার ক্ষেত্রেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। নিজেকেও সতর্ক থাকতে হবে। ২০ বছর বয়স থেকে আজীবন নিয়মিত নিজের স্তন নিজে পরীক্ষা করুন।
প্রতি মাসে কমপক্ষে একবার করে স্তন পরীক্ষা করুন। বিশেষ করে মাসিক শুরু হওয়ার পর প্রথম ১০ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে এই পরীক্ষা করতে পারেন। মাসিক নিয়মিত হলে ক্যালেন্ডারের পাতায় দাগ কেটে রাখুন। ব্যথা যেদিন কম থাকে, পরীক্ষার জন্য সেই দিনটিকে বেছে নিন।
প্রতি মাসে ওই তারিখেই পরীক্ষা করুন। গর্ভকালীন ও স্তন্যদানের সময়ও স্তন পরীক্ষা করুন। স্তনে কোনো চাকা অনুভূত হলেই চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।